কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) একটি জরুরি চিকিৎসা পদ্ধতি, যা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় ব্যবহৃত হয়। এটি হৃদপিণ্ড এবং শ্বাসনালী পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োগ করা হয়, যা মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের জন্য অক্সিজেনযুক্ত রক্তের প্রবাহ বজায় রাখতে সাহায্য করে। সিপিআর সাধারনত বুকের চাপ (চেস্ট কমপ্রেশন) এবং কৃত্রিম শ্বাস (রেস্কিউ ব্রিদিং) এর সমন্বয়ে পরিচালিত হয়। সিপিআরের মৌলিক উদ্দেশ্য মস্তিষ্ক এবং হৃদপিণ্ডে অক্সিজেন পৌঁছানো: সিপিআরের মূল লক্ষ্য হল রক্ত সঞ্চালন বজায় রাখা যাতে মস্তিষ্ক এবং হৃদপিণ্ডে অক্সিজেন সরবরাহ করা যায়। ক্ষতি প্রতিরোধ করা: হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে গেলে, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাবে বিপর্যয় ঘটতে পারে। সিপিআর দ্রুত পরিচালনা করলে টিস্যু মৃত্যুর সম্ভাবনা কমে যায় এবং স্থায়ী মস্তিষ্কের ক্ষতি রোধ করা সম্ভব হয়। পরবর্তী চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি: সিপিআর রোগীর শারীরিক অবস্থাকে স্থিতিশীল করে এবং চিকিৎসক আসা পর্যন্ত জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রাখে। সিপিআরের প্রয়োজনীয়তা সিপিআর তখনই করা উচিত যখন: হার্ট অ্যারেস্ট ঘটে: যখন ব্যক্তির হৃদপিণ্ডের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং পালস পাওয়া যায় না। শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়: যদি ব্যক্তি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে না পারে বা শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। সিপিআরের ধাপসমূহ 1. পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং আপনার চারপাশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: নিশ্চিত করুন যে পরিস্থিতি নিরাপদ। ব্যক্তিকে ডাকুন: "আপনি কি শুশ্রূষিত আছেন?" জিজ্ঞেস করুন। শ্বাস নিচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করুন: শ্বাসপ্রশ্বাস আছে কিনা তা দেখতে কয়েক সেকেন্ড দেখুন। 2. জরুরি সেবা যোগাযোগ ৯৯৯ এ ফোন করুন: যদি ব্যক্তির পালস নেই এবং শ্বাস নেই, অবিলম্বে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাইতে হবে। সাহায্য আসা পর্যন্ত সিপিআর চালিয়ে যেতে হবে। 3. বুকের চাপ (চেস্ট কমপ্রেশন) ব্যক্তিকে সমতল অবস্থায় শুইয়ে দিন: নিশ্চিত করুন যে সে সঠিকভাবে শুয়ে আছে। বুকের মাঝখানে হাতের তালু রাখুন: দুই হাতের তালু একত্রিত করে বুকের মাঝের অংশে রাখুন। চাপ দিন: প্রতি মিনিটে ১০০ থেকে ১২০ বার চাপ দিন, চাপ দেওয়ার গভীরতা ৫ থেকে ৬ সেমি (২ থেকে ২.৪ ইঞ্চি) হওয়া উচিত। শিথিল করুন: চাপ দেওয়ার পর বুককে সম্পূর্ণ শিথিল করুন যাতে হৃদপিণ্ডের রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে হতে পারে। 4. কৃত্রিম শ্বাস (রেস্কিউ ব্রিদিং) ৩০:২ অনুপাত: প্রতি ৩০টি বুক চাপ দেওয়ার পর ২টি কৃত্রিম শ্বাস দিন। শ্বাস দেওয়ার প্রক্রিয়া: আক্রান্ত ব্যক্তির নাক বন্ধ করুন এবং মুখের মাধ্যমে শ্বাস দিন। নিশ্চিত করুন যে বুক উঠছে। শিশুদের ক্ষেত্রে: শিশুদের ক্ষেত্রে, ১৫:২ অনুপাত ব্যবহার করা হয়। শিশুদের বুকের চাপ দেওয়ার সময় দুই আঙ্গুল ব্যবহার করুন এবং মুখ এবং নাক ঢেকে দিন। 5. AED (স্বয়ংক্রিয় বাহ্যিক ডিফিব্রিলেটর) ব্যবহার করুন যদি AED উপলব্ধ হয়, দ্রুত তা ব্যবহার করুন। এটি হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। সিপিআরের সময়কাল এবং কার্যকারিতা মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব: সাধারণত, ৪ মিনিটের মধ্যে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কে ক্ষতি হতে শুরু করে, এবং ৭ মিনিট পর এটি স্থায়ী হতে পারে। রক্তের প্রবাহ: সিপিআর শুরু করার পর যত দ্রুত সম্ভব রক্ত প্রবাহ চালু করতে হবে। সিপিআরের পরবর্তী পদক্ষেপ যতক্ষণ না ব্যক্তি স্বতঃস্ফূর্ত সঞ্চালন (ROSC) ফিরে আসে বা চিকিৎসক এসে মৃত ঘোষণা না করেন, ততক্ষণ পর্যন্ত সিপিআর চালিয়ে যেতে হবে। ডিফিব্রিলেশন: কখনও কখনও হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করতে বৈদ্যুতিক শক (ডিফিব্রিলেশন) প
Related topics: